ছাত্র বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও জাতীয় নাগরিক দলের (এনসিপি) আহ্বায়ক মুহাম্মদ নাহিদ ইসলামের বিরুদ্ধে বাণিজ্য সচিব নিয়োগে ৩৫ কোটি টাকা ঘুষ নেওয়ার এক বিস্ফোরক অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় দেশের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক অঙ্গনে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযোগ অনুযায়ী, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) তথ্য পাচার মামলার ৬ নম্বর আসামি মো. মাহবুবুর রহমানকে বাণিজ্য সচিব পদে পদোন্নতি দিতে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ লেনদেন হয়েছে। ফৌজদারি মামলার আসামি হওয়া সত্ত্বেও তাকে দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি মন্ত্রণালয়ের সচিব পদে নিয়োগ দেওয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
জনপ্রশাসন নীতি অনুযায়ী, কোনো সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা চলমান থাকলে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু এক্ষেত্রে আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন করে মাহবুবুর রহমানকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে, যা প্রশাসনে নজিরবিহীন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
উল্লেখ্য, মো. মাহবুবুর রহমান পূর্বে আইসিটি বিভাগে ডেটা সেন্টারের দায়িত্বে ছিলেন। তার দায়িত্বকালেই দেশের কোটি কোটি নাগরিকের সংবেদনশীল তথ্য পাচারের মতো গুরুতর ঘটনা ঘটে। তৎকালীন সরকারের প্রভাবশালী মহলের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতার অভিযোগও রয়েছে। এমন একজন বিতর্কিত কর্মকর্তাকে গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দেওয়ার পেছনে বড় ধরনের আর্থিক লেনদেনের অভিযোগটি তাই নতুন মাত্রা পেয়েছে।
জুলাই বিপ্লবের পর গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একজন উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করা নাহিদ ইসলামের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ওঠায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এবং সচেতন মহলে তীব্র আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই বলছেন, যে দুর্নীতির বিরুদ্ধে এই বিপ্লব, সেই দুর্নীতির পুনরাবৃত্তি কোনোভাবেই কাম্য নয়।
এই নিয়োগ এবং এর পেছনের আর্থিক লেনদেনের অভিযোগটি দেশের প্রশাসন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং মেধার মূল্যায়নকে মারাত্মকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
এ বিষয়ে মুহাম্মদ নাহিদ ইসলাম বা তার দল এনসিপি’র পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি। অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে একটি নিরপেক্ষ ও
তদন্তের দাবি জানিয়েছেন অনেকে।
সূত্র : দৈনিক আজকের কন্ঠ
আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...