সিলেটে টানা বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমা ছাড়িয়ে গেছে। নগরের বিভিন্ন এলাকায় পানি আটকে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, সিলেটের সুরমা-কুশিয়ারা নদীর দুটি পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। তবে অন্য নদ-নদীর পানি এখনও বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি।
রোববার সকালে সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন জানান, সিলেটে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪০৪ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা চলতি বছরের সর্ব্বোচ্চ বৃষ্টিপাত।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড-পাউবো থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, রোববার সকাল ৯টায় সুরমা নদীর পানি লুবাছড়া পয়েন্টে ১০৬ সেন্টিমিটার ও কানাইঘাট পয়েন্টে ৭৯ সেন্টিমিটার, কুশিয়ারা নদীর পানি অমলশীদ পয়েন্টে ৯৩ সেন্টিমিটার এবং মনু নদীর পানি মৌলভীবাজার পয়েন্টে বিপদসীমার শূন্য দশমিক ১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মোহাম্মদ মাহবুব মুরাদ সাংবাদিকদের বলেন, দুই-দিনের বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে আমাদের নদ-নদীগুলো পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। যদি বন্যা হয় তার জন্য জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। এছাড়া শুকনো খাবার এবং ত্রাণ সামগ্রীসহ ৫৮২টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
টানা বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় সিলেট নগরের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় জলাবদ্ধতা লেগেই আছে। অনেকের বাসা-বাড়িতে পানি ওঠার খবর পাওয়া গেছে।
সিলেট নগরীর উত্তর ধোপাদিঘীরপাড়ের বাসিন্দা আহমেদ মিয়া বলেন, শনিবার দুপুরের পর আমাদের বাসার সামনের রাস্তাতে পানি উঠে। সন্ধ্যার দিকে আবার নেমেও গিয়েছিল। পরে রাত থেকে আবার বৃষ্টি শুরু হলে রোববার সকালে উঠে দেখি রাস্তায় পানি।
বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় বাসাতেও পানি ঢুকে গেছে। কবে যে আমরা এই জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাবো আল্লাহ জানেন।
নগরীর বনকলাপাড়ার বাসিন্দা শাকিল বলেন, “রোববার ভোরে বাসার ভেতরে পানি ঢুকেছে। পানি এখনও রয়েছে। একই সঙ্গে বৃষ্টিও হচ্ছে। এই সমস্যা অনেকদিন ধরে, কিন্তু কোনো সমাধান হচ্ছে না। কবে হবে তাও কেউ বলতে পারে না। এই হচ্ছে আমাদের অবস্থা।
তিনি বলেন, আমাদের আতঙ্ক বেড়ে গেছে, এখন বৃষ্টি হলেই আতঙ্কে থাকি কখন বাসার ভেতরে পানি ঢোকে।
আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...