সংবাদ শিরোনাম :
চট্টগ্রামে-কক্সবাজারে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীর যৌথ মহড়া ‘অপারেশন প্যাসিফিক এঞ্জেল ২৫-৩’, সার্বভৌমত্ব নিয়ে প্রশ্ন মামলা থেকে নাতির নাম বাদ দেওয়ার চুক্তিতে চাঁদাবাজি, ২ সমন্বয়ক গ্রেফতার লন্ডন-কাণ্ডে আতঙ্ক! ড. ইউনূসের সঙ্গে জাতিসংঘে যাচ্ছেন ফখরুল-তাহেরসহ ৪ রাজনীতিবিদ বাণিজ্য সচিব নিয়োগে ৩৫ কোটির বাণিজ্য, কাঠগড়ায় নাহিদ ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক চালক ও শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের মাঝখানে সাহসী ভূমিকা এড. টিপুর সিটি কর্পোরেশনের উদাসীনতায় সতের হাজার রেজিস্ট্রেশন নিয়ে চলছে ৪৫ হাজার মিশুক কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডালিম গ্রেফতার শিক্ষার্থীর উপর ইজিবাইক চালকের হামলা, কয়েকজন আহত রূপগঞ্জে চাঁদাবাজি ও প্রবাসীদের মারধরের অভিযোগে ১২ হিজড়া গ্রেফতার রূপগঞ্জে এসডিআই শাখার শুভ উদ্বোধন
শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:৪০ পূর্বাহ্ন

লন্ডন-কাণ্ডে আতঙ্ক! ড. ইউনূসের সঙ্গে জাতিসংঘে যাচ্ছেন ফখরুল-তাহেরসহ ৪ রাজনীতিবিদ

স্বপ্নবাংলা নিউজ ডেস্ক / ৪৩ বার পঠিত
প্রকাশিত সময় : বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টার গাড়িতে হামলাচেষ্টার ঘটনায় সৃষ্ট তিক্ত অভিজ্ঞতা ও আতঙ্কের মধ্যেই জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্ক যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তবে তাঁর এই সফরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা। সূত্র বলছে, লন্ডনের ঘটনার পর সম্ভাব্য বিক্ষোভ ও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ড. ইউনূস এক নজিরবিহীন পদক্ষেপে তাঁর সফরসঙ্গী হিসেবে দেশের চার শীর্ষ রাজনীতিবিদকে নিয়ে যাচ্ছেন, যাদেরকে তাঁর ‘রাজনৈতিক বডিগার্ড’ বা ‘রাজনৈতিক রক্ষাকবচ’ হিসেবেই দেখা হচ্ছে।

সম্প্রতি ‘জুলাই বিপ্লবের’ বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে লন্ডনে একদল বিক্ষোভকারীর রোষের মুখে পড়ে বাংলাদেশ হাইকমিশনের গাড়ি এবং উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম এসময় ডিম নিক্ষেপ ও পথরোধের চেষ্টা করা হয়। বিদেশের মাটিতে সরকারের একজন প্রতিনিধির বিরুদ্ধে এমন আচরণ অন্তর্বর্তী সরকারকে তীব্র ঝাঁকুনি দিয়েছে। এই ঘটনাই ড. ইউনূসের আসন্ন সফর নিয়ে গভীর উদ্বেগ তৈরি করেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

কারা যাচ্ছেন ‘রাজনৈতিক বডিগার্ড’ হিসেবে?

জাতিসংঘের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি আন্তর্জাতিক ফোরামে ড. ইউনূসের সফরসঙ্গী হিসেবে থাকছেন:

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর মহাসচিব।

সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের: জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির।

আখতার হোসাইন: জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মহাসচিব।

হুমায়ুন কবির: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের মতে, এটি কেবল একটি সাধারণ প্রতিনিধিদল নয়। এই চারজন নেতা নিজ নিজ দলের অত্যন্ত প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব এবং জুলাই আন্দোলনে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। পেশাদার নিরাপত্তা রক্ষীর পাশাপাশি এই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের উপস্থিতি ড. ইউনূসের চারপাশে একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক বলয় তৈরি করবে, যা সম্ভাব্য বিক্ষোভকারীদের মানসিকভাবে দুর্বল করতে এবং যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবেলায় সহায়ক হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক বলেন, “এটি একটি সুস্পষ্ট বার্তা যে, অন্তর্বর্তী সরকার একা নয়। ড. ইউনূসের সঙ্গে দেশের প্রধান রাজনৈতিক শক্তিগুলোর প্রতিনিধিরা রয়েছেন। এটি একদিকে যেমন বিদেশে সরকারের ভাবমূর্তি তুলে ধরবে, তেমনই অন্যদিকে বিরোধী গোষ্ঠীর জন্য একটি শক্ত সতর্কবার্তা।”

নিউইয়র্কে তীব্র প্রতিবাদের আশঙ্কা

শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেলেও নিজ দেশের মানুষের কাছে বিতর্কিত ড. মুহাম্মদ ইউনূস নিউইয়র্কে প্রবাসী বাঙালিদের তীব্র ক্ষোভ ও রোষের মুখে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন। তার এই সফরকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যসহ পৃথিবীর নানা দেশ থেকে বাঙালিরা নিউইয়র্কে সমবেত হচ্ছেন। তাদের একটাই উদ্দেশ্য— দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্তকারী এবং শ্রমিকের অধিকার হরণকারী হিসেবে পরিচিত এই ব্যক্তিকে বিশ্ববাসীর সামনে ধিক্কার জানানো।

ড. ইউনূসের আগমনের খবর পেয়েই নিউইয়র্কের প্রবাসী আওয়ামী লীগ, যুবলীগসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মী এবং সাধারণ বাঙালিরা সামাজিক মাধ্যমে প্রতিবাদের ডাক দেন। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে শত শত প্রবাসী বাঙালি ‘বাংলাদেশের শত্রু’, ‘শ্রমিকের রক্তচোষা’, ‘চক্রান্তকারী’ ইত্যাদি স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে তার সম্ভাব্য অবস্থানস্থলের সামনে বিক্ষোভের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ক্ষুব্ধ প্রতিবাদকারীদের অনেকেই তাকে জুতাপেটা করার হুমকি দিয়েছেন। তাদের অভিযোগ, ড. ইউনূস নোবেল পুরস্কারের আড়ালে দেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক চক্রান্তে লিপ্ত এবং তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের হাজার হাজার কর্মীর অধিকার হরণ করেছেন।

এক প্রতিবাদকারী বলেন, “যে ব্যক্তি নিজ দেশের সম্মানহানি করে, গরিবের টাকা আত্মসাৎ করে, তাকে আমরা আমেরিকার মাটিতে শান্তিতে থাকতে দেব না। পৃথিবীর যেখানেই সে যাবে, সেখানেই বাঙালিরা তাকে প্রত্যাখ্যান করবে।”

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ড. ইউনূসের নিউইয়র্ক সফর একটি লজ্জাজনক ব্যর্থতায় পরিণত হতে চলেছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। অবস্থা এতটাই বেগতিক যে, তার নির্ধারিত কিছু কর্মসূচি বাতিল হতে পারে বলেও গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। তার বিরুদ্ধে এই স্বতঃস্ফূর্ত গণধিক্কার প্রমাণ করে যে, বিশ্বজুড়ে থাকা বাঙালিরা দেশের বিরুদ্ধে যেকোনো চক্রান্তের বিষয়ে এখন অত্যন্ত সচেতন।

সব মিলিয়ে, আগামী ২১ সেপ্টেম্বর রাতে ড. ইউনূসের নিউইয়র্ক যাত্রা শুধু একটি কূটনৈতিক সফরই থাকছে না, বরং লন্ডনের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এটি অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য একটি বড় ধরনের রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা পরীক্ষাও বটে।

সূত্র : দৈনিক আজকের কন্ঠ

আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...


এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..