সংবাদ শিরোনাম :
আদালতের রায় পেয়ে দখলদারদের ৭ দিনের সময় দিলেন বাড়ির মালিক ভূমি অফিসে সেবাপ্রার্থীরা যেন হয়রানিমুক্ত সেবা পায়- জাহিদুল ইসলাম মিঞা ‘বিষপান করা’ চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে চোখ হারানো চার যুবকের পাশে তারেক রহমান যুবদল নেতার বিরুদ্ধে সাংবাদিকের পায়ের রগ কেটে ফেলার হুমকির অভিযোগ সাংবাদিকদের প্রতি তাচ্ছিল্য: নেতা হওয়ার উন্মাদনায় অচিরেই অব্যাহত অবনতি অনিবার্য হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা রাজপথে রক্ত দেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে:  মাওলানা ফেরদাউসুর  ফতুল্লায় চুন্নুর ভাতিজাদের তাণ্ডব, প্রশাসনের নীরব ভূমিকা! ফতুল্লায় আজমেরী সমর্থকদের ঝটিকা মিছিল’ বিএনপির ধাওয়া বিএনপি ক্ষমতায় গেলে জুলাই আন্দোলনের সকল শহীদ এবং আহতদের দায়িত্ব নেবে রাষ্ট্র: রিজভী ভোক্তা সচেতনতার নবযাত্রা শুরু করলো সিসিএস নারায়ণগঞ্জ
সোমবার, ২৬ মে ২০২৫, ০১:৩৭ পূর্বাহ্ন

গাইবান্ধায় কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি, হুমকিতে পরিবেশ

স্বপ্নবাংলা নিউজ ডেস্ক / ৪১ বার পঠিত
প্রকাশিত সময় : শনিবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২৪

গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের দিঘলকান্দী গ্রামে অবৈধভাবে গাছের গুঁড়ি ও কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি হচ্ছে এমন একটি অভিযোগ পাওয়া যায় গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে আব্দুল মান্নানের বিরুদ্ধে ।

পলাশবাড়ী উপজেলা থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের দিঘলকান্দী গ্রামটি অবস্থিত। ঢাকা-রংপুর জাতীয় মহাসড়ক থেকে গ্রামটির দূরত্ব প্রায় আড়াই কিলোমিটার। বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রায় ২২ শতক জায়গা জুড়ে কয়লা তৈরির কারখানা। যার চারদিকে উঠতি আমন ফসলের মাঠ ও বসতবাড়ি। অত্র ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের দিঘলকান্দী গ্রামের মতিনের বাড়ির পাশে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি হচ্ছে, অথচ এ কারখানার পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই। চুল্লি থেকে নির্গত ধোঁয়ায় দূষিত হচ্ছে পরিবেশ, নষ্ট হচ্ছে ফসল। এ ছাড়া আশপাশের এলাকার মানুষ বিভিন্ন রোগ শ্বাসকষ্ট, কাশিসহ নানা সমস্যায় ভুগছে।

প্রতিটি চুল্লিতে প্রতি দফায় ২০০ থেকে ৩০০ মণ কাঠ পোড়ানো হয়। ৮ থেকে ১০ দিন পোড়ানোর পর কয়লা হয়।

স্থানীয় গ্রামবাসী বলেন, দিঘলকান্দী গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মান্নান ও ভায়রাভাইসহ মেয়ে জামাইকে নিয়ে যৌথভাবে কয়লা তৈরির কারখানা গড়ে তুলেছেন। ৩ মাস ধরে এখানে গাছের গুঁড়ি দিয়ে কয়লা তৈরি হচ্ছে। কারখানায় রয়েছে আটটি চুল্লি। সাঘাটা থেকে শ্রমিক নিয়ে এসে কাজ করা হচ্ছে। তিন ফসলি জমিতে এ কারখানা গড়ে তোলা হয়েছে। গাছ কাটা ও তা জ্বালানি হিসেবে পোড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ফলে কালো ধোঁয়ায় পরিবেশ ও ফসলের ক্ষতি হচ্ছে।

সরেজমিনে আরো দেখা যায়, ইট দিয়ে চুল্লি বানিয়ে মাটির প্রলেপ দেওয়া হয়েছে। চুল্লিতে গাছের গুঁড়ি পুড়িয়ে কয়লা তৈরি করা হচ্ছে। চুল্লির চারদিকে রাখা গাছের গুঁড়ি ও শুকনা কাঠ-লাকড়ি। মোট আটটি চুল্লির মধ্যে দুটি চুল্লিতে আগুন জ্বলছে। কালো ধোঁয়ায় চারদিক ছেয়ে গেছে। চারপাশে বিভিন্ন আকারের গাছের গুঁড়ি রাখা হয়েছে। প্রতিটি চুল্লিতে ১৫০ মণ কাঠ ফেলে আগুন দেওয়া হচ্ছে। এক পাশে চুল্লির মুখ খোলা। সেদিক দিয়ে গাছের গুঁড়ি, লাকড়ি দেওয়া হয়। খোলা মুখে আগুন দিয়ে সেটিও বন্ধ করে দেওয়া হয়।

কারখানার মালিকেরা বলেন, এক মণ খড়ি পুড়িয়ে পাঁচ-ছয় কেজি কয়লা পাওয়া যায়। এ পর্যন্ত ১৮০ মণ কয়লা বিক্রি হয়েছে। প্রতিটি চুল্লিতে প্রতি দফায় ২০০ থেকে ৩০০ মণ কাঠ পোড়ানো হয়। ৮ থেকে ১০ দিন পোড়ানোর পর চুলা থেকে কয়লা বের হয়। পোড়ানো কয়লা ঠান্ডা করে ব্যবসার জন্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ক্রেতাদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। প্রতি মণ লাকড়ি ১৪০ টাকায় কিনে প্রতি মণ কয়লা ৮০০ টাকায় বিক্রি করেন।তাঁদের কারখানায় পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি নেই। তাঁরা ৩ মাস আগে কাজ শুরু করেছেন। পরিবেশের ছাড়পত্র ও প্রশাসনের অনুমতির জন্য আবেদন করবেন।

দিঘলকান্দী গ্রামের বাসিন্দারা বলেন, চারপাশে বাড়িঘর আর ফসলি জমি। এর মধ্যে কীভাবে এ রকম একটা কারখানা হয়? প্রশাসন এগুলো দেখভাল করছে না। সারাক্ষণ কালো ধোঁয়া বের হচ্ছে। ধোঁয়ার কারণে বয়স্ক আর শিশুরা সব সময় হাঁচি, কাশি ও শ্বাস কষ্টে ভুগছে। তরুণ- যুবকদেরও একই অবস্থা। এভাবে মানুষ বাঁচে কীভাবে?

স্থানীয় কৃষকেরা বলেন, ধানগাছ যখন বড় হচ্ছিল এর মধ্যে কয়লা তৈরির কারখানার কালো ধোঁয়ায় গাছ চিটচিটে হয়ে গেছে। গাছের পাতা হাত দিয়ে ঘষা দিলে হাত কালো হয়ে যায়। এ অবস্থায় ফলন ঠিকমতো পাবেন কি না, তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন।

পলাশবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুল হাসান বলেন,কাঠ দিয়ে কয়লা তৈরির বিষয়টি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি । ওই সব কারখানার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

আশরাফুজ্জামান সরকার, গাইবান্ধাঃ-

আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...


এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..