সংবাদ শিরোনাম :
সাংবাদিকদের প্রতি তাচ্ছিল্য: নেতা হওয়ার উন্মাদনায় অচিরেই অব্যাহত অবনতি অনিবার্য হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা রাজপথে রক্ত দেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে:  মাওলানা ফেরদাউসুর  ফতুল্লায় চুন্নুর ভাতিজাদের তাণ্ডব, প্রশাসনের নীরব ভূমিকা! ফতুল্লায় আজমেরী সমর্থকদের ঝটিকা মিছিল’ বিএনপির ধাওয়া বিএনপি ক্ষমতায় গেলে জুলাই আন্দোলনের সকল শহীদ এবং আহতদের দায়িত্ব নেবে রাষ্ট্র: রিজভী ভোক্তা সচেতনতার নবযাত্রা শুরু করলো সিসিএস নারায়ণগঞ্জ বদলগাছীতে দাবী মৌলিক উন্নয়ন সংস্থার আয়োজনে সমৃদ্ধি কর্মসূচীর আওতায় উপজেলা দিবস উদযাপন জগন্নাথপুরে বিদ্যুৎ স্পৃষ্টে একজন নিহত চড়-থাপ্পড় দেওয়াকে কেন্দ্র করে সিদ্ধিরগঞ্জে কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে কিশোর পায়েল খুন, গ্রেফতার-৪ নাসিকের আহ্বান কোরবানির পশুর হাটের১৭টি স্থান
রবিবার, ২৫ মে ২০২৫, ১১:০১ অপরাহ্ন

অক্সিজেন সিলিন্ডারের অভাবে সিনিয়র সাংবাদিক আবু সাইদের মৃত্যু

সারোয়ার হোসেন অপু / ৪৯ বার পঠিত
প্রকাশিত সময় : বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

বদলগাছী ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অক্সিজেন সিলিন্ডার থাকা সত্ত্বেও, পর্যাপ্ত অক্সিজেন না পাওয়ায় সিনিয়র সাংবাদিক এবং বদলগাছী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মো: আবু সাইদ(৪৭) হার্ট অ্যাটাক করে মারা যান। সম্পূর্ণ ঘটনাটি সাংবাদিকদের জানান, মরহুম আবু সাইদ পুত্র মো: সিজান সিদ্দিকী এবং বদলগাছী উপজেলার ডাঙ্গীসাড়া নিবাসী মেহেদি হাসান নামক এক যুবক।

মরহুম আবু সাইদ পুত্র সিজান সিদ্দিকী বলেন, ঘটনাটি ঘটে ডিসেম্বর মাসের আঠারো তারিখে। আমি শোকাহত থাকায় আপনাদের কিছু জানাতে পারি নি। তিনি বলেন, আমার আব্বু হঠাৎ করেই মোটরসাইকেল চালানোকালীন বিকেল সাড়ে তিনটায় অসুস্থ হয়ে ঘামতে শুরু করেন এবং হাত পা ছেড়ে দিতে থাকেন। সেদিন বাড়িতে আমার মা এবং বড় ভাই ছিলেন না। আমি তখন কোনমতে দুইজন পথচারীর সাহায্য নিয়ে আব্বুকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। তার মধ্যে একজন মেহেদি হাসান ছিলেন এবং তিনি প্রায় শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ছিলেন। আব্বুকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর আব্বুর নাকে অক্সিজেন পাইপ দিয়ে আমাকে তিনটি ইনজেকশন নিয়ে আসতে বলেন। আমি সেগুলো নিয়ে আসি। তখনও আব্বু কথা বলছিলেন। আমি আতঙ্কিত এবং ভয় পাওয়ায় হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা মামুন নামক এক লোক, স্মৃতি নামক একজন মহিলা এবং দুইজন নার্স ছিলেন। তাদের মধ্যে কেউই ডাক্তার ছিলেন না। তারা নাকি আমি যখন ইনজেকশন নিতে গিয়েছিলাম তখন আব্বুর জিহ্বার নিচে একটি ঔষধ দেয়। তারপর আমি উপস্থিত থাকাকালীন তারা কয়েকটি ঔষধ খুলে আমার হাতে দেয় এবং বলে আব্বু যেন সেই ঔষধ চিবিয়ে খান। আমি তখন বলি সব ঔষধ ঠিকঠাক আছে কি। তারা কিছুক্ষণপর উত্তর দেন ‘হ্যাঁ ঠিক আছে’। তখন আব্বু সেই দায়িত্বে থাকা স্মৃতি নামক মহিলাকে বলেন, ম্যাডাম এই হাসপাতালেই ঔষধ ভুল হওয়ায় আমার বাবা মারা গিয়েছেন। সে বিষয়ে আমি আগে থেকে অবগত ছিলাম তাই তাদের জিজ্ঞাসা করেছিলাম। তাদের কথায় এবং আব্বুর অবস্থা খারাপ হওয়া দেখে পরে ঔষধ খাওয়ানো হয়। তারপর আব্বুর বলেন তার মুখ নাকি শুকিয়ে আসতিছে। তারপর মামুন নামের লোকটি আব্বুকে পানি খাওয়ান এবং বলেন দোয়া-কালেমা পরতে থাকেন। তারপর তারা বলেন এখানে আর হবে না, নওগাঁ নিয়ে যেতে হবে। আমি তখন একটি পরিচিত মাইক্রোবাসকে কল দিয়ে হাসপাতালে নিয়ে আসি। হাসপাতালে দায়িত্বে যারা ছিলেন তারা বলেন, এ গাড়িতে নিয়ে যাওয়া ঠিক হবে না। এখানে অক্সিজেন সিলিন্ডার নেই। আব্বুর তখন একটু একটু কথা বলছিলেন। আব্বু, আমি এবং সেখানে উপস্থিত থাকা লোকজন অনেকবার অনুরোধ করি জরুরী বিভাগের অক্সিজেনটি দিতে। কিন্ত তারা বলেন সেটি নাকি সরাসরি সংযুক্ত খোলা যায় না। ঐটা দেওয়া যাবে না। তারপর আমার ডাকা গাড়িতে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না। তারপরে তারা হাসপাতালের আম্বুলেন্সকে কল দেন এবং আমায় বলেন সেখানে নাকি অক্সিজেন সিলিন্ডার সংযুক্ত আছে । তারপর সেই আম্বুলেন্স ড্রাইভার দ্রুত আসার কথা বলে আঁধা ঘন্টা সময় লাগান। আব্বুর অবস্থা তখন অনেকটা খারাপ। কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছিলেন তারপর আম্বুলেন্স হাসপাতালে আসলে আব্বুকে তোলার সময় নাক থেকে অক্সিজেন পাইপ সরানো হয়, তখন আব্বু জোরে-জোরে নিশ্বাস নিতে থাকেন। সেই সময় মামুন নামের লোকটি, দৌড়ে গিয়ে সেই জরুরী বিভাগের অক্সিজেন সিলিন্ডার খুলে নিয়ে এসে আম্বুলেন্সে সেট করেন। তারপর নওগাঁ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে আব্বুকে মৃত ঘোষণা করেন।
সিজান সিদ্দিকী আরও বলেন, বদলগাছী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যদি সময় মতো অক্সিজেন সিলিন্ডার আমাদের দেওয়া হতো, তাহলে আরও আগে আমার ডাকা গাড়িতে আব্বুকে নওগাঁ নিয়ে গিয়ে বাঁচানো সম্ভব হতো।
সেইসময় উপস্থিত মেহেদি হাসান সিজান সিদ্দিকীর প্রতিটি কথায় সহমত পোষণ করেন।

উপজেলাবাসী সংবাদিকদের জানান, সাংবাদিক সাইদ দীর্ঘ পঁচিশ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশায় আছেন। এবং বদলগাছী অনেক উন্নয়ন তার লেখাতেই হয়েছে। তার মতো এত সম্মানিত, পরোপকারী, সৎ ব্যক্তিই যদি সঠিক চিকিৎসার অভাবে মারা যান। তাহলে আমাদের কি হবে।

আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...


এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..