সংবাদ শিরোনাম :
নদীতে পড়ে নিখোঁজ হওয়া জেলের মরদেহ পাঁচদিন পর উদ্ধার  বগুড়া-৫ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী তৌহিদুল আলম মামুনের গণসংযোগ বগুড়ার ৭টি আসনে বিএনপির এমপি প্রার্থীদের ‎সবুজ সংকেত পেলেন যারা মদনপুর ইউনিয়ন বিএনপি নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান: ঐক্যবদ্ধ হয়ে জনগণের দ্বারে দ্বারে যান: এড. টিপু নারায়ণগঞ্জে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অবৈধ গ্যাস সংযোগ উচ্ছেদ অভিযান ‎ফতুল্লায় ভূয়া সাংবাদিকের অপকর্মে বিপাকে পেশাদাররা নারীরা পিছিয়ে থাকলে সমাজের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয় : বাবুল সাংবাদিকদের কলম থামিয়ে সাংবাদিকদের হত্যা ও গুমের শিকার হতে হয়েছে: এড. টিপু মা-বোনদের যে দুঃখ–দুর্দশা রয়েছে, ৩১ দফা কর্মসূচি বাস্তবায়ন হলে তা আর থাকবে না: দিলারা মাসুদ ময়না রূপগঞ্জে নির্মিত এশিয়ান হাইওয়ে সড়কের বালু অবাধে চুরি
শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৪৬ পূর্বাহ্ন

‎ফতুল্লায় ভূয়া সাংবাদিকের অপকর্মে বিপাকে পেশাদাররা

স্বপ্নবাংলা নিউজ ডেস্ক / ২৩ বার পঠিত
প্রকাশিত সময় : শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২৫

নারায়নগঞ্জ সদর উপজেলা ফতুল্লায় সাংবাদিকতার নাম ভাঙিয়ে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে ভুয়া সাংবাদিকদের দৌরাত্ম্য। তথাকথিত আইপিটিভি (ইউটিউব), অনলাইন নিউজপোর্টাল ও যত্রতত্র ফেসবুক লাইভ, প্রেস লেখা স্টিকার, আইডি কার্ড ঝুলিয়ে অবাধে চলাচল করছে ওইসব সাংবাদিক নামধারী ব্যক্তি। অথচ তাদের কোনো অনুমোদন নেই, নেই কোন শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশা পরির্বতন করেই বনে যায় সাংবাদিক।

বিভিন্ন অপরাধ থেকে ওঠে আসা সাংবাদিক হয়ে দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছেন ফতুল্লার অলিতে-গলিতে এই নামধারী সাংবাদিকরা।

কোন নিউজ লিখতে না পারলেও তারা বড় সাংবাদিক! গলায় ক্যামেরা ঝুলিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন কথিত এই সাংবাদিকরা।

বাল্যবিবাহ, মারামারি, স্বামী-স্ত্রীর যুদ্ধ, পরকিয়া, মেম্বারদের অনিয়ম ছাড়া অন্য কোন জনস্বার্থের সংবাদে এই সাংবাদিকদের দেখা মিলে না। তারা শুধু ইউটিউব ও ফেসবুকে একটি প্রোফাইল তৈরি করে সেটিকে টিভি চ্যানেল অথবা নিউজপোর্টাল হিসেবে ঘোষণা করে প্রচার করে যাচ্ছে।

এমনকি নারী নির্যাতন, চাঁদাবাজি, ব্ল্যাকমেইলিং, মাদকের সঙ্গে জড়িতরাও সাংবাদিক পরিচয় দিচ্ছে সর্বত্র। এ ছাড়াও শিক্ষাগত যোগ্যতা কিংবা সংবাদ লিখতে না জানলেও নামসর্বস্ব কিছু পত্রিকার কার্ড কিনে রাতারাতি হয়ে যাচ্ছে সাংবাদিক।

গত পাঁচ বছর যাবৎ ভুয়া সংবাদকর্মীদের তৎপরতা বেশি দেখা যাচ্ছে! এরা যেখানে-সেখানে অবাধে বিচরণ করছে। ভুয়া সাংবাদিক নিয়মিতভাবে করে যাচ্ছে নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ড। এসব নীতিহীন কর্মে বাড়ছে গুজব, বিভ্রান্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।

হঠাৎ ফতুল্লা সদর উপজেলার কিছু সাংবাদিক নিয়ে ফেসবুকে আক্রমণাত্মক পোষ্টে সাংবাদিকদের নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করছে সাধারণ মানুষ।
সমাজের চিহ্নিত অপরাধীরা এখন সাংবাদিকতা পেশাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে অনেক নেতাকর্মীর নাম বিক্রি করে বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত হচ্ছেন।

গত কয়েক মাসে ফতুল্লায় সাংবাদিক পরিচয়দানকারী কয়েকজন মাদকসহ পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন।

গত মঙ্গলবার ফতুল্লা রুশেন হাউজিং ফ্ল্যাট বাড়িতে চাঁদাবাজী করতে গিয়ে কথিত সাংবাদিক শামীমা খানম সোনিয়া গণধোলাইয়ের শিকার হন। ২০২৩ সালের জুন মাসে কথিত সাংবাদিক শামীমা খানম সোনিয়া তার স্বামী সোহা ড্রাইভার ২০ পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার হয়ে জেল খেটেছেন। গত মাসে ৩০ সেপ্টেম্বর দুটি চোরাই মটর সাইকেলসহ ভুয়া সাংবাদিক শুভ তার সহযোগী মহিউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

২০১৯ সালে ৩০ জুন রাতে “দৈনিক গনজাগরণ ও অপরাধের খোঁজে” পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ফতুল্লা মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক(নিঃ) আজিজুল হকের কাছে প্রতি মাসে ২০,০০০/- টাকা করে চাঁদা দাবী করে ডেমরার কুখ্যাত ভুয়া সাংবাদিক সেলিম নিজামীসহ ৫ জন ভুয়া সাংবাদিক গ্রেপ্তর হন।

২০২১ সালের ১২ মে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের হাতে ১২০০ পিস ইয়াবাসহ ভুয়া সাংবাদিক মো. সাইফুল ইসলাম সুমন ও তার সহযোগী মো. ইমরান হোসেন আসিমকে গ্রেপ্তার করে। পরে জামিনে বের হয়ে আবারও মাদক ব্যবসা শুরু করে।

এছাড়াও মাদক বিক্রি, গ্যাস সংযোগে চাঁদাবাজি, বাল্যবিবাহতে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে জনতার হাতে আটক হয়ে জেল খেটেছেন অনেকে। এসব সাংবাদিকরা জেলখেটে আবার সাংবাদিকতা শুরু করেছেন করে যাচ্ছেন নানা অপকর্ম। পাড়া, মহল্লায় তাদের ভিজিটিং কার্ডে সয়লাব, নামধারী মানবাধিকার সংগঠন, ভুঁইফোড় অনলাইনের কার্ডের নাম লিখে ভিজিটিং কার্ড তৈরি করে পাড়া, মহল্লার মানুষদের ব্লাকমেইল করে যাচ্ছেন তারা।
ফতুল্লার বিভিন্ন এলাকা থেকে সৃষ্টি হওয়া এসব সাংবাদিকরা নিউজ তো ভালো কথা নিজের জীবনবৃত্তান্ত ও ভালো করে লিখতে পারবে না বলে জানান ফতুল্লার প্রবীন এক সাংবাদিক। কিন্তু তাদের দাপটে আজ মূলধারার সংবাদকর্মীরা অসহায় বলেও জানান তিনি।

তাদের এরকম কর্মকাণ্ডের ফলে মূলধারার সাংবাদিকদের বিব্রতকর অবস্থা ছাড়াও মাঝেমধ্যে পড়তে হচ্ছে ঝুঁকির মুখে। এমন বাস্তবতায় তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নজরদারি। ভবিষ্যতে বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়াতে এই ভুয়া সাংবাদিকদের এখনই নিয়ন্ত্রণ করার দাবি সচেতন মহলের।

ফতুল্লায় কর্মরত মুলধারার কয়েকজন সাংবাদিক জানান বিভিন্ন স্থানে সাংবাদিকতার নামে চাঁদাবাজি ও নানা ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে কার্ডধারীরা। এ ধরনের ভুঁইফোঁড় কথিত সাংবাদিকরা ফতুল্লা বিভিন্ন এলাকায় বাসাবাড়ি, মিল-কারখানা, বেকারিসহ নানা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রচার কিংবা ভ্রাম্যমাণ আদালতের ভয় দেখিয়ে করছে চাঁদাবাজি।

এ ছাড়া স্থানীয়ভাবে কোনো রাজনৈতিক সভা-সমাবেশসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের কথা শুনলেই আইডি কার্ড ঝুলিয়ে উপস্থিত হয় সেখানে। এরপর নিজেকে সাংবাদিক হিসেবে জাহির করে করে নানা অঙ্গভঙ্গি। অনুষ্ঠান শেষে রাজনৈতিক নেতা কিংবা আয়োজকদের পেছনে পেছনে ছোটে মৌমাছির ঝাঁকের মতো। পরে আর পত্রিকায় নিউজ আসে না।

তারা নিজেরাই বিভিন্ন স্থানে গড়েছে নামে-বেনামে সংগঠন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় মূলধারার কিছু সাংবাদিক, থানা পুলিশ এবং স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তির সঙ্গে সখ্যতা রয়েছে তাদের। অপকর্মে জড়িতদের দমনে কঠোর পদক্ষেপ নেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এমন প্রত্যাশা ফতুল্লার মূলধারার সাংবাদিকদের।

ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি (তদন্ত) আনোয়ার বলেন, ভুয়া সাংবাদিকদের দ্বারা কেউ হয়রানির শিকার হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিবো। আর গতকালের (মঙ্গলবার) বিষয় আমরা কোন লিখত অভিযোগ পাইনি। যদি কোন লিখিত অভিযোগ পাই তাহলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিবো।

আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...


এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..