২০২৪ সালের ঐতিহাসিক জুলাই-আগস্ট গণআন্দোলনে জীবন উৎসর্গকারী শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনায় নারায়ণগঞ্জের আলিটেক এলাকার জামিয়া মুহাম্মাদিয়া নুরিয়া মাদ্রাসায় এক হৃদয়স্পর্শী দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
এ মহতি আয়োজনে সম্পৃক্ত ছিলেন এলাকার ছাত্র-শিক্ষক, সাধারণ জনগণ এবং বিশিষ্ট সমাজসেবক ও মডেল গ্রুপের কর্ণধার, উদীয়মান রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব মাসুদুজ্জামান মাসুদ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মাসুদুজ্জামান মাসুদ বলেন, “২০২৪ সালের আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন, তারা আমাদের জাতীয় ইতিহাসের অমূল্য সম্পদ। তাদের রক্তে ভবিষ্যতের বাংলাদেশ নির্মিত হবে। আমরা তাদের কখনো ভুলবো না। তাঁদের আত্মত্যাগের মর্যাদা দিতে হলে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে সত্য ও ন্যায়ের পথে চলতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আজ যারা সমালোচনা করে তারা বলে আমি ১৬-১৭ বছর কোথায় ছিলাম। কেউ কেউ আমাকে আওয়ামী লীগের দোসর বলেও অপবাদ দেয়। আমার পরিবার নিয়েও কটাক্ষ করা হয়, যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও লজ্জাজনক। শামীম ওসমান কিংবা সেলিম ওসমানের সাথে ছবি খুঁজে বেড়াচ্ছে অনেকে। আমি বলি, খুঁজে দেখুন—কোন ছবি পান কিনা। আমার জবাব আমি মাঠে দেবো, জনগণের ভালোবাসা আর উন্নয়নের মাধ্যমে দেবো।”
তিনি রাজনীতির প্রকৃত তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে বলেন, “রাজনীতি মানে হলো রাজ = মহান, নীতি = আদর্শ। যিনি নীতিবান, আদর্শবান, তিনিই রাজনীতি করতে পারেন। আমি রাজনীতি করছি ক্ষমতার জন্য নয়, বরং মানুষের সেবা করার মানসিকতা থেকে। পদ-পদবী না থাকলেও আমি দেশের ও জনগণের পাশে দাঁড়াতে চাই। আল্লাহ আমাকে অনেক দিয়েছেন, আমি তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ। যদি দল আমাকে সুযোগ দেয়, আমি কাজ করব। আর যদি না দেয়, তাহলেও দলের হয়ে কাজ করে যাবো। কারণ আমি বিশ্বাস করি — দেশ ও দলের স্বার্থই সবার আগে।”
তার বক্তব্যে ছিল বিনয়, আত্মবিশ্বাস এবং দেশপ্রেমের এক গভীর বার্তা। তিনি বলেন, “সমালোচনা নয়, একে অপরকে সম্মান জানিয়ে দেশ ও মানুষের জন্য কাজ করাই হওয়া উচিত আমাদের লক্ষ্য। এই দেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে শান্তি, উন্নয়ন ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা করাই আমার স্বপ্ন।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মাদ্রাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থী, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, যুব সমাজ ও সাধারণ জনগণ। পুরো মিলাদ ও দোয়ার সময় ছিল আবেগঘন পরিবেশ। শেষে বিশেষ মোনাজাতে আন্দোলনে নিহত শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করা হয় এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করা হয়। সেই সাথে দেশ ও জাতির কল্যাণ ও অগ্রগতির জন্য বিশেষ দোয়া করা হয়।
এ দোয়া মাহফিল যেন হয়ে উঠেছিল জাতির আত্মার সাথে একটি পবিত্র সংযোগ, যেখানে ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে দেশ ও মানুষের কল্যাণে নিজেকে বিলিয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার প্রকাশ পেয়েছে।
আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...