বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের শিশু সার্জারি ওয়ার্ডের সামনে এক নাটকীয় ও রক্তক্ষয়ী ঘটনার সৃষ্টি হয়েছে। এক নারীকে ঘিরে তার প্রাক্তন ও বর্তমান স্বামীর মধ্যে তীব্র বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এতে ধারালো ক্ষুরের আঘাতে গুরুতর আহত হন বর্তমান স্বামী।
আহত ব্যক্তির নাম মামুন (৩২)। তিনি শেরপুর উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের শংকর হাটা গ্রামের বাসিন্দা। তার পিতা আইয়ুব আলী।
ঘটনাটি ঘটে রবিবার (২৪ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১১টায়, হাসপাতালের ৫ম তলার শিশু সার্জারি ওয়ার্ডের সামনে। স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা আহত মামুনকে উদ্ধার করে তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করেন।
প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, মামুনের স্ত্রী মোছাঃ ফেরদৌসী চার মাস আগে তার প্রথম স্বামী মোঃ রাসেল (৩২) এর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ করেন। রাসেলের পিতা রুহুল। তিনি পেশায় গাড়ি চালক এবং বর্তমানে কর্মরত আছেন শেরপুর কৃষি অফিসে।
বিচ্ছেদের দুই মাস পর ফেরদৌসী দ্বিতীয়বারের মতো মামুনের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।
রবিবার সকালে ফেরদৌসী ও মামুন হাসপাতালে ফেরদৌসীর বড় বোনের অসুস্থ সন্তানকে দেখতে আসেন। এ সময় হঠাৎ সেখানে উপস্থিত হন প্রাক্তন স্বামী রাসেল। তাদের মধ্যে প্রথমে তর্কাতর্কি শুরু হয়, যা এক পর্যায়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। রাসেল উত্তেজিত হয়ে পকেট থেকে ক্ষুর বের করে মামুনের ওপর হামলা চালান এবং ঘটনার পরপরই সেখান থেকে পালিয়ে যান।
মামুন বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানা গেছে। ঘটনার পরপরই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বগুড়া সদর থানায় খবর দেন। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে এবং হামলাকারী রাসেলকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে।
এই ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষসহ রোগী ও স্বজনদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণ মানুষের মাঝে প্রশ্ন উঠেছে, এমন সংবেদনশীল ও জনবহুল স্থানে কীভাবে এ ধরনের সহিংসতা ঘটতে পারে।
সামাজিক বিশ্লেষকরা বলছেন, পারিবারিক সম্পর্কের অবনতি ও মানসিক অবসাদ থেকেই এ ধরনের ঘটনা জন্ম নেয়। তারা মনে করেন, পারস্পরিক সম্মান ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না হলে এ ধরনের সহিংসতার ঝুঁকি বাড়তেই থাকবে।
হাসপাতলের মতো জায়গায় এমন হামলা শুধু ব্যক্তি নয়, গোটা সমাজের নিরাপত্তা ও মূল্যবোধকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে। দ্রুত বিচার ও কঠোর শাস্তি ছাড়া এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকানো কঠিন।
আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...