নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ভয়াবহ সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয়দের দাবি, দুই কুখ্যাত মাদক সিন্ডিকেটের মধ্যে ক্ষমতার লড়াই এখন চরমে পৌঁছেছে, যা যেকোনো সময় রক্তক্ষয়ী ঘটনায় রূপ নিতে পারে।
দুই কুখ্যাত মাদক সম্রাটের ক্ষমতার দ্বন্দ্ব
এলাকাবাসী ও বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী আক্তার ওরফে কিলার আক্তার ও ইমরান রহমান মিথুন বিপুল পরিমাণ মাদকসহ পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের হাতে গ্রেফতার হয়েছিল।
তারা প্রায় আড়াই কোটি টাকার মাদকসহ ধরা পড়ে। জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর, তারা পুলিশের কিছু অসাধু সদস্যের সহযোগিতা নিয়ে ফতুল্লার পাগলা, জেলেপাড়া, আলীগঞ্জ, নূরবাগ, রসুলপুর, কুতুবপুরসহ জুরাইন, শ্যামপুর, কাজীরগাও এলাকায় বিশাল মাদক সাম্রাজ্য গড়ে তোলে।
তাদের এই সিন্ডিকেট কোটি টাকার ব্যবসায় পরিণত হয়। কিন্তু পরবর্তীতে লোভের কারণে নিজেরাই নিজেদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যায়। মাদকের নিয়ন্ত্রণে একক আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টায় শুরু হয় দ্বন্দ্ব।
লোক ভাড়া করে মাদক বিরোধী মিছিল!
দ্বন্দ্ব চরমে উঠলে মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) বিকেলে আলোচিত মাদক ব্যবসায়ী মিথুন তার প্রতিদ্বন্দ্বী আক্তারকে ঘায়েল করতে নাটকীয় পদক্ষেপ নেয়।
অভিযোগ উঠেছে, প্রতি জনকে ২০০ টাকা করে লোক ভাড়া দিয়ে কুতুবপুরের পাগলা এলাকায় “মাদকবিরোধী ঝাড়ু মিছিল ও মানববন্ধন” আয়োজন করে মিথুনের অনুসারীরা। এসময় তারা কিলার আক্তারের ছবি সম্বলিত ব্যানারও ব্যবহার করে।
এলাকায় আতঙ্ক, জনগণের আহ্বান
কিলার আক্তার ও মিথুনের দীর্ঘদিনের মাদক ব্যবসা, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে রাখা অবস্থার কারণে কুতুবপুরসহ ফতুল্লা এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ।
স্থানীয় সচেতন মহল অবিলম্বে তাদের মাদক স্পট গুঁড়িয়ে দেওয়ার এবং দুই সিন্ডিকেটের মূল হোতাসহ সহযোগীদের গ্রেফতারের জন্য র্যাব, ডিবি, পুলিশ ও যৌথ বাহিনীর জরুরি হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।
মিথুনের সাফাই
অভিযোগের বিষয়ে মিথুন বলেন,
“আমি ঝাড়ু মিছিল করিয়েছি, তবে কাউকে টাকার বিনিময়ে আনা হয়নি। আক্তার আমার বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের মিথ্যা তথ্য দিচ্ছে।”
অন্যদিকে আক্তারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, মিথুন ক্ষমতা ধরে রাখতেই লোক ভাড়া করে এই মিছিল করেছে।
এমন ঘটনায় পুরো কুতুবপুর, ফতুল্লা এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
স্থানীয় জনগণ আশঙ্কা করছেন, যেকোনো সময় ভয়াবহ সংঘর্ষ, রক্তক্ষয়ী হামলা এবং হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে, যা সাধারণ মানুষের জীবন ও সম্পদের জন্য বড় হুমকি।
আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...