শাবান মাস মুসলিম উম্মাহর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস। নবীজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এই মাসে এত বেশি নফল রোজা রাখতেন যে, মনে হত তিনি পুরো মাসই রোজা রাখছেন। এটি রমজানের প্রস্তুতির মাস, যা আমাদের ইবাদতে মনোযোগী হওয়ার জন্য বিশেষভাবে সহায়ক।
আইয়ামে বীজের রোজা
আইয়ামে বীজের রোজা প্রতি চান্দ্র মাসের ১৩, ১৪, এবং ১৫ তারিখে পালন করা হয়। এই মাসে (১৪৪৬ হিজরি) আইয়ামে বীজের রোজার তারিখগুলো ইংরেজি ক্যালেন্ডারে পড়েছে:
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ (বৃহস্পতিবার)
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ (শুক্রবার)
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ (শনিবার)
নবীজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিয়মিতভাবে এই তিন দিন রোজা রাখতেন। তিনি বলেছেন, মাসের যে কোনো তিন দিন রোজা রাখা পুরো মাস রোজা রাখার সমান সওয়াবের কাজ। কারণ, প্রতিটি ভালো কাজের সওয়াব আল্লাহ তায়ালা ১০ গুণ বাড়িয়ে দেন। তাই আসুন, আমরা রমজানের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে অন্তত এই তিনটি রোজা রাখার চেষ্টা করি।
শাবান মাসের বিশেষ রাত: লাইলাতুন নিসফ মিন শাবান (শবে বরাত)
শাবান মাসের একটি বিশেষ রাত হলো ১৫ শাবানের রাত, যা আমাদের সমাজে শবে বরাত নামে পরিচিত। এই রাতে আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাদের ক্ষমা করেন, তবে হিংসা-বিদ্বেষ পোষণকারী এবং শিরককারীকে ক্ষমা করেন না।
এই রাতের ফজিলত হাসিল করতে আমাদের মন থেকে বিদ্বেষ এবং শিরকের মতো গুনাহ দূর করতে হবে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে শিরকমুক্ত এবং হিংসামুক্ত হয়ে এই রাতের বরকত পাওয়ার তাওফিক দিন।
শবে বরাত এবং বিদআত
দুঃখজনকভাবে শবে বরাতকে কেন্দ্র করে সমাজে অনেক ভুল ধারণা ও বিদআত প্রচলিত আছে। আমাদের উচিত এই রাতের ফজিলত এবং সুন্নাহসম্মত আমল সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জন করা এবং বিদআত পরিহার করা।
আমাদের করণীয়
বেশি বেশি নফল রোজা রাখা।
পরিবারসহ সাধ্য অনুযায়ী ইবাদত করা।
শবে বরাতের ফজিলত হাসিলের জন্য অন্তরকে বিদ্বেষমুক্ত করা।
সুন্নাহ অনুযায়ী আমল করা এবং সমাজে প্রচলিত বিদআত থেকে বিরত থাকা।
আসুন, আমরা শাবান মাসের এই সুযোগগুলোকে কাজে লাগাই এবং রমজানের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করি। আল্লাহ আমাদের এই মাসে বেশি বেশি নফল ইবাদত করার তাওফিক দান করুন।
আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...