সংবাদ শিরোনাম :
বিস্ফোরণ মামলায় মীর্জা ফখরুলসহ ৬৫ জনকে অব্যাহতি ২৪ ঘন্টা না যেতে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে আবারো দুর্ঘটনা, নিহত আরও ৩ খুলনায় ট্রলার-ফেরি মুখোমুখি সংঘর্ষ, শিশুসহ নিখোঁজ ৩ আবহাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ আপডেট! ভারী থেকে অতিভারী বর্ষনের সতর্কতা! আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে দলীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক আচরণ চাই: মাসুদুজ্জামান মাসুদ বন্দরে ২৮ ড্রাম চোরাই পামওয়েলসহ দুইজন গ্রেফতার ফাঁদ পেতে ভূয়া সার্টিফিকেট/আইডি কার্ড তৈরির দোকানে অভিযান, বিপুল সংখ্যক ভুয়া সার্টিফিকেট, আইডি, দলিল উদ্ধার  ফতুল্লায় চোরের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ মানুষ, সাংবাদিক সুজনের বাড়িতে দুর্ধষ চুরি  যৌথবাহিনীর অভিযানে আগ্নেয়াস্ত্র সহ যুবক গ্রেপ্তার  ৮ কেজি গাঁজাসহ দুই যুবক আটক 
শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫, ০৩:৪৩ অপরাহ্ন

মৃত ব্যাক্তির ইচ্ছে পূরণে বগুড়া শেরপুরে বট ও পাকুড় গাছের বিয়ে

স্বপ্নবাংলা নিউজ ডেস্ক / ১৩২ বার পঠিত
প্রকাশিত সময় : শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪

মৃত ব্যাক্তির ইচ্ছে পূরণে বগুড়া শেরপুরে
বট ও পাকুড় গাছের বিয়ে

মিন্টু ইসলাম বগুড়া প্রতিনিধি :
চারদিকে বাজছে সানাইয়ের সুর। উলুদ্ধনী দিচ্ছেন শতশত নারীরা। পুরোহিত পাঠ করছেন মন্ত্র। পরিপাটি করে সাজানো হয়েছে বিয়ের আসর। এক পলক দেখার জন্য ভিড় করছেন অনেকেই। সনাতন ধর্মালম্বীদের রীতি অনুযায়ী গায়ে হলুদ, আদিশ্রাদ্ধ, অধিবাস, বিয়ের আয়োজনের কোনো কিছুর যেনো কমতি নেই। তবে এত কিছু আয়োজন করা হয়েছে শুধু একটি বট আর পাকুড় গাছের বিয়েকে ঘিরে।
বৃহস্পতিবার (১২ই ডিসেম্বর) বগুড়া শেরপুরের পৌর এলাকায় থানা রোড সংলগ করতোয়া নদীর তীরে, হরিতলা কালীমাতা মন্দির প্রাঙ্গনে এই বট ও পাকুড় গাছের বিয়ের আয়োজন করা হয়।
সকাল থেকেই শুরু হয় এই বিয়ের কার্যক্রম, চলে রাত পর্যন্ত। বটপাকুড়ের বিয়েতে বটগাছকে কনে আর পাকুড় গাছকে বর হিসেবে সাজানো হয়। শাস্ত্র অনুযায়ী বিয়েতে কনের বাবা হিসেবে প্রদীপ দাস কন্যাদান করেন আর ছেলের বাবা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিমল দাস। মন্ত্র পাঠের মাধ্যমে বিয়ের কাজ সম্পন্ন করেন পুরোহিত অমিত তরফদার হোদল। বিয়েতে উপস্থিত সকলের জন্য আয়োজন করা হয় নিরামিষ খাবারের।
বিগত কয়েক বছর আগে শহরের গোসাইপাড়া এলাকার রিনা দাস নামে এক ধর্মপ্রাণ মহিলা, সন্তান না থাকায় করতোয়া নদীর তীরে হরিতলা কালিমাতা মন্দির প্রাঙ্গনে গাছ দুইটিকে রোপন করে, নিজের সন্তানের মত লালন-পালন শুরু করেন। ইচ্ছে ছিল কাজ দুইটি বড় হলে মা হিসেবে ধুমধাম করে তাদের বিয়ে দিবেন। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস গেলো বছর পরলোকে গমণ করে রিনা রানী দাস। তার এই ইচ্ছে পূরণ করতে তার বোনেরা, তার স্বামী এবং পরিবারের সদস্যরা এই বট ও পাকুর গাছের বিয়ের আয়োজন করেন।
মৃত রীনা দাসের স্বামী প্রদীপ দাস বলেন, আমার স্ত্রীর মারা যাওয়ায় আগে ইচ্ছে ছিলো. তার হাতে লাগানো এই বট-পাকুড় গাছের বিয়ে দিবেন, দিন তারিখও ঠিক হয়েছিলো। কিন্তু হঠাৎ তিনি মারা যাওয়ায়, এক বছর পর তার ইচ্ছে পূরণ করতেই এমন আয়োজন করা হয়।
তার বোন রানু দাস, গীতা রাণী দাস ও গোলাপী রানী দাস বলেন, আমার বোনের কোন সন্তান ছিলো না, সে এই গাছ দুটিকে নিজের সন্তানের মত ভালোবাসতো। তিনি মা হিসেবে নিজে দাড়িয়ে থেকে বিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। আমরা বোনের আত্বার শান্তি কামনায় তার মনেই ইচ্ছে পূরণ করতেই ধুমধাম করে এই বট পাকুড় গাছের বিয়ে দিলাম।
পুরোহিত অমিত তরফদার হোদল বলেন, বট-পাকুর গাছ বা আমলকি গাছের বিয়ের রীতি প্রচলিত আছে যুগ যুগ থেকে। এটি শুধু মাত্র বিয়ের আয়োজন নয়, এই বিয়ের উদ্দেশ্যে হলো বৃক্ষরাজদের রক্ষা ও প্রকৃতির প্রতি শ্রদ্ধা। প্রকৃতির প্রতি প্রেম বা শ্রদ্ধা থেকেই যুগ যুগ থেকে এমন আয়োজন করেন সনাতনধর্মাবল্মী তথা হিন্দুরা।

আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...


এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..