আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর শিথিলতায় দেশে আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করছে মাদকের ব্যবহার। গত কয়েক মাসে মাদকসেবীর সংখ্যা অন্তত ২০ লাখ বেড়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন। হাত বাড়ালেই মিলছে মাদক। সেই সঙ্গে মাদক ব্যবসায় দেশ থেকে অর্থপাচারও বাড়ছে।
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এখন প্রকাশ্যে চলছে মাদক সেবন ও বিক্রি, সম্প্রতি আমাদের কাছে একটি ছবি আসছে, উপজেলা দিঘীরপাড় গ্রামের সবুজ মিয়া দোকানে বসে মাদক সেবন করছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায় সে একজন মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকাসক্ত, যাদুকাটা নদীর পাড়ে তার একটা চায়ের দোকান আছে, এখান থেকে এসে মাদকের ব্যবসা করে যাচ্ছে। এছাড়াও মানিগ্রামের সাবেক মেম্বার পদপ্রার্থী কামাল হোসেন একজন মাদক ব্যবসায়ী তার বাড়িতে প্রকাশ্যে মাদক সেবনের আড্ডা চলে বলে জানা যায়। বেশ কিছুদিন পূর্বে সুনামগঞ্জের ডিএনসির অভিযানে বিপুল পরিমাণ মাদকসহ গ্রেপ্তার হয়েছিল। একই গ্রামের শাহ আলম, মাদকবিরোধী অভিযানে একাধিকবার মাদকসহ গ্রেপ্তার হয়েছেন, এবং জেল থেকে বের হয়ে থেমে নেই তার মাদক ব্যবসা, একাধিক সূত্র বলছে পুলিশ প্রশাসনকে তারা মাসুরা দিয়ে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। একই গ্রামের আব্দুর রশিদ সেও একজন মাদক ব্যবসায়ী এর সঙ্গে জড়িত আছে তার পরিবারের অনেক সদস্য, এবং হুসেন আলী একজন চোরাকারবারি ও মাদক ব্যবসায়ী, বেশ কিছুদিন পূর্বে ভারত থেকে মাদক পাচার করার সময় বিজেপির হাতে আটক হয়, তার সহযোগী ছিল আরো তিনজন। সকাল সাড়ে সাতটা চাঁনপুর বিজিবি ৪৪ বোতল মদসহ একজনকে আটক করে, কিন্তু কিভাবে বিজিবি হাত থেকে সে পালিয়ে যায়, ঘটনাটি বুঝতে পেরে সকালে ঘুরতে আসা তিনজন যুবক এর প্রতিবাদ করলে চোরাকার বারিরা তাদেরকে আটক করে মুক্তিপণের জন্য পরিবারকে অবগত করে । পরে আবার পরিবারের লোকজন বিজিবির সহায়তায় তাদেরকে উদ্ধার করা হয়। এর মূল হোতা হুসেন আলী। এছাড়াও আরো একাধিক মাদক ব্যবসায়ী রয়েছে, উপজেলার বিটপৌলানপুর এর মাদক ব্যবসায়ী সুমন, মাহারাম মাসুক মিয়া. এছাড়াও প্রতিটি গ্রামে এখন মাদক ব্যবসায়ীর অভাব নেই। হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে মাদক।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায় কামাল মিয়া, শাহ আলম, আব্দুর রশিদ, মাসুক মিয়া, বর্তমানে ৮ থেকে ১০ বছরের ছেলের হাতে তুলে দিচ্ছে মাদক, ভয়াবহ এই মাদকে কবলে পড়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন অনেক পরিবার, তাই এসব থেকে এলাকাবাসী মুক্তি চাই।
তাহিরপুর উপজেলার মাদকবিরোধী স্বেচ্ছাসেবী কমিটির সাবেক আহবায়ক মোঃ আব্দুল মান্নান বলেন মাদকের ভয়াল থাবায় ধ্বংসের পথে তরুণ প্রজন্ম। শহর থেকে গ্রাম, স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়—সর্বত্রই মাদক পাওয়া যাচ্ছে হাতের নাগালে। মাদকের কারণে বেড়ে যাচ্ছে সামাজিক অবক্ষয়। তরুণসমাজ হারিয়ে ফেলছে তাদের নৈতিক মূল্যবোধ। এই ভয়াল মাদকের কারণে ভেঙে যাচ্ছে পারিবারিক বন্ধন, নষ্ট হচ্ছে আস্থা-বিশ্বাস, পরিবার ও সমাজে তৈরি হচ্ছে নতুন আতঙ্ক।
আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...