নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে হইচই নামক একটি পার্ক থেকে ১০ লাখ টাকার চাঁদা না পেয়ে পার্ক মালিককে হত্যার চেষ্টা করে সোনারগাঁ বিএনপি নেতা অধ্যাপক রেজাউল করিম সমর্থিত যুবদল নেতা শাহাদাত বাহিনী।
গত ২৮ মে বুধবার সন্ধ্যায় সোনারগাঁ উপজেলার শম্ভুপুরা ইউনিয়নের চরকিশোরগঞ্জর ফেরীঘাট এলাকায় ঘটে এ ঘটনা।
ভুক্তভোগী সোনারগাঁ থানা বিএনপির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক, শম্ভুপুরা ইউনিয়নের যুগ্ম আহবায়ক ও ৯ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মতিন মাতাবর মুন্সি। তাকে উদ্বার করে ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট খানপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
জানা যায়, হইচই পার্কের জন্য সোনারগাঁ বিএনপি নেতা অধ্যাপক রেজাউল করিম সমর্থিত শাহাদাত বাহিনী ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে এর প্রতিবাদ করায় পার্কের মালিক মতিন মাতাবর মুন্সির মালয়েশিয়া প্রবাসী ছেলেকে মারতে যায়। এঘটনায় মতিন মাতাবর মুন্সি বাঁধা দেওয়ায় তাকে প্রানে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে একটি হাইস ভর্তি ১৫/১৬ জনের একটি গ্রুপ চরকিশোরগঞ্জ এলাকার গজারিয়া ফেরিঘাট সংলগ্ন হইচই পার্কে আসে। পার্ক ও পার্কের মালিক মতিনের উপর হামলা চালায়। এসময় মতিনকে হাতুরি ও লোহার পাইপ দিয়ে মাথায়, হাতে ও পায়ে গুরুত্বর আঘাত করে অস্ত্র দিয়ে গুলার করার চেষ্টা করলে এলাকাবাসীর প্রতিরোধে হামলাকারীরা পালিয়ে যায় তখন মতিনকে উদ্বার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সোনারগাঁয়ের শম্ভুপুরা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড চরকিশোরগঞ্জ। এই এলাকার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত জুলাই আন্দোলনের পর থেকে সোনারগাঁ বিএনপি নেতা অধ্যাপক রেজাউল করিম সমর্থিত যুবদল নেতা শাহাদাৎ প্রধান বাহিনীর সাথে সোনারগাঁ বিএনপির আহবায়ক আজাহারুল ইসলাম মান্নান সমর্থিত মতিন মাতাবর মুন্সির সাথে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। এরই জের ধরে দফায় দফায় চরকিশোরগঞ্জ এলাকায় কয়েক দফায় সংঘর্ষ এর ঘটনা ঘটে। আর তারমধ্য হইচই পার্কটি মান্নান সমর্থিত মতিন কিনলে প্রতিনিয়ত রেজাউল সমর্থিত শাহাদাত বাহিনী পার্কে চাঁদা দাবী করে আসছিলো এবং ১ লক্ষ টাকা ইতিমধ্যে চাঁদাও নেয়।
ভুক্তভোগী মতিন মাতাবর মুন্সি সংবাদ মাধ্যমকে জানায়, গত বছর আমি হইচই নামক একটি পার্ক ৬০ লক্ষ টাকা দিয়ে কিনছি। কিন্তু গত ৮ মাস ধরে রেজাউল করিম সমর্থিত শাহাদাত বাহিনীরা আমাকে ঠিক মত চালাতে দিচ্ছে না। খালি চাঁদা চায়। এর আগেও তাদের এক লক্ষ টাকা চাঁদা দিছি। আজকে সকালে আবার ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা চাইছে। আমি চাঁদা না দিলে পার্ক খুলতে দিবে না। আমার ছেলে এর বাঁধা দেওয়ায় তাকে মারার উদ্দেশ্যে একটি হাইস দিয়ে ১৫/১৬ জন লোক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আসে। আমি আমর ছেলেকে সেখান থেকে সরিয়ে দিই। তাই ওরা আমাকে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে অস্ত্র মামলার ১৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামী জামিনে বের হওয়া ওমর ফারুক সহ বাবু, ইমন, শহিদ, মহিন, শাওন, সোহাগ সহ আরও ১৫/১৬ জন আমার উপর হামলা চালায়। এই ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, ডাকাতি, খুন সহ একাধিক মামলা আছে।
তিনি আরও ওরা হচ্ছে রেজাউল করিম সমর্থিত গ্রুপ। আমি যাতে মান্নান গ্রুপের বিএনপি না করতে পারি তার উদ্দেশ্যেই ওরা আমার পার্ক থেকে নিয়মিত চাঁদা দাবী করে আসতাছে। আমি ও আমার ছেলে দিতে অস্বীকার জানালে আজকে ওরা আমাদের উপর হামলা চালায়। ওরা আরো কয়েকবার আমার কাছ থেকে চাঁদা নিছে। প্রতিদিন আমার পার্কে গিয়ে পার্কের সমস্ত টাকা নিয়ে আসে।
অন্যদিকে সোনারগাঁ থানায় একই দিন মতিন মাতাবর মুন্সির বিরুদ্ধে চরকিশোরগঞ্জের বলাৎকার করার চেষ্টায় মোঃআরিফ নামে এক বালক একটি অভিযোগ দায়ের করে। খানপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মতিন মুন্সির পক্ষ থেকেও একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, হইচই পার্ক এর জায়গাটি মতিন মাতবর মুন্সির চাচার। বিগত আওয়ামী লীগ আমলে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মিলে এই পার্কটি দেয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থেকে পালালে হইচই পার্কটি ক্রয় করে মতিন মাতবর মুন্সি ৬০ লক্ষ টাকা দিয়ে।
আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...