জগন্নাথপুরের নিখোঁজ অসীম(৩০) এর ভাসমান মরদেহ শান্তিগঞ্জের একটি হাওর থেকে উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। ঘটনাটি আসলে কি এনিয়ে জনমনে চলছে নানা জল্পনা -কল্পনা।
স্থানীয়, পরিবার ও পুলিশ সুত্রে জানাযায়, সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার ঘুংগিয়ারগাঁও গ্রাম নিবাসী মৃত নিরঞ্জন দেবনাথ এর ছেলে অসীম দেবনাথ (৩০) বিগত ৭ই জুন রোজ শনিবার (ঈদুল আজহার দিন) সকালে ছাতক উপজেলার ভাতগাঁও ইউনিয়ন এর অন্তর্ভুক্ত গোয়াসপুর গ্রাম নিবাসী রাজ মিয়ার বাড়ীতে যায়। এই বাড়ীতে অসীম দেবনাথ (৩০) এক পর্যায়ে রাজ মিয়ার ছেলে রেজন মিয়ার বাস চালক বীরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা শাহজাহান মিয়া(৪২) এর সাথে কথা কাটাকাটি করে বাস চালক শাহজাহান মিয়াকে চুরিকাঘাত করে। এতে রেজন মিয়ার লোকজন অসীম দেবনাথকে বেঁধে রেখেছে এমন খবর পেয়ে অসীম এর মা ও পরিবার এর লোকজন তাকে ছাড়াতে গিয়ে তার সন্ধান না পেয়ে চলে আসেন। এবং সম্ভাব্য সকল জায়গায় অনেক খোঁজাখুঁজি করে ছেলের সন্ধান না পেয়ে নিখোঁজ অসীম এর মা পদ্মা রানী গতকাল ১০ জুন ছাতক থানায় জিডি করেন। সে নিখোঁজ হওয়ার পাঁচ দিনের দিন অর্থাৎ ১১ ই জুন রোজ বুধবার শান্তিগঞ্জ উপজেলার সিদখাই গ্রামের হাওরে ভাসমান লাশ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা শান্তিগঞ্জ থানা পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করেন। খবর পেয়ে শান্তিগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রেরন করেছে। নিখোঁজ অসীম দেবনাথ (৩০) এর মরদেহ শনাক্ত করেছে তার ভাই অর্জুন দেবনাথ। অসীম দেবনাথ এর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন রাজ মিয়া এই দিন অসীম দেবনাথ এর মায়ের নিকট হস্তান্তর করেছেন। এনিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বিষয়টি রহস্যজনক মনে করছেন সচেতন মহল।
এ ব্যাপারে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি তাদের অভিপ্রায় ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, অসীম দেবনাথ গোয়াসপুর গ্রামের রাজ মিয়ার বাড়ী হতে নিখোঁজ হওয়ার পর ভাসমান অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সে নিজ থেকে নিখোঁজ হয়েছে কিনা? তাকে হত্যা করা হয়েছে তা পুলিশি তদন্তে অবশ্যই বের হয়ে আসবে। বিধায় বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবী জানিয়েছেন এলাকার সচেতন মহল।
এ ব্যাপারে নিহত অসীম দেবনাথ এর মা পদ্মা রানী বলেন, ঈদের দিন সকালে গোয়াসপুর গ্রামের রেজন মিয়া আমার ছেলেকে ফোন দিয়ে বাড়ী হতে ডেকে নেয়। আমার ছেলেকে ওরা বেধে রেখেছে এমন খবর পেয়ে আমি দুপুর ১টার দিকে গেলে তারা বলে আমার ছেলেকে ছেড়ে দিয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, আমার ছেলেকে রেজন মিয়া ও তার লোকজন মেরে ফেলছে। আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।
এ ব্যাপারে শান্তিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আকরাম আলী বলেন, ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করার পাশাপাশি সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারন জানা যাবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, লাশের পরিচয় পাওয়া গেছে। উদ্ধারকৃত ভাসমান মরদেহ এর বড় ভাই জগন্নাথপুর উপজেলার ঘুংগিয়ারগাঁও গ্রাম নিবাসী অর্জুন দেবনাথ লাশ শনাক্ত করেছেন। আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে।
আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...